"এ মরণ আমাকে ছোঁবে না..."


শাহনূর আর নেই....!
কীভাবে কত উৎকণ্ঠায় এই পঁচিশটি দিন কাটিয়েছি, সেটা আর কাকেই বা বলবো...!
আজকে খানিক আগেই, টুং ক'রে একটা মেসেজ আসলো, টলেডো থেকে, বজ্রপাতের মত... একটা মেসেজেই যেন গৃহ আমার অন্ধকার হয়ে গেল...
শুধুমাত্র ওর কণ্ঠটি শোনা ব্যতীত, আমার প্রিয়তম মানুষটিকে, আমি কোনোদিন চোখের সামনে দেখিনি, আর কোনোদিন দেখতে পাওয়ার আশাটাও আজকে শেষ হলো... সেই সাথে, বাংলাদেশ থেকে মার্কিন মুলুকে অভিবাসী, একটি দীর্ঘ উপন্যাসের সমাপ্তি হলো..
শাহনূরকে নিয়ে হয়তো অনেক অনেক স্মৃতিকথা রয়েছে, অনেক অনেক কবিসাহিত্যিক বন্ধুর, সেগুলো হয়তো অনেকেই প্রকাশ করবেন, হয়তো করবেন না... কিন্তু শাহনূরের লেখা কবিতা সবার সাথে একইভাবে কথা ব'লে যাবে...
বহু বছর আগে কোথাও, ওর লেখা পড়ে, মন্তব্যে শুধু "অতলান্তিক" শব্দটা লিখেছিলাম, সেই থেকে সে আমায় ভালোবেসেছিল... তারপর অজস্র অনুভব বিনিময়, প্রশ্নোত্তর, গান ও কবিতা... এতদিন বাংলাদেশে অবস্থান ক'রেও যেন আমি টলেডোর এই মহাপ্রাণ মানুষটির পায়ের কাছে ব'সে সহস্রাব্দীর পাঠ নিয়েছি... সেই পাঠশালা আজ বন্ধ হলো...
মুক্তমঞ্চে একদিন শাহনূরই আমাকে নিয়ে এসেছিল, আমার সামান্য লেখা, মানুষটা বড্ড ভালোবেসেছিল... আজ হাজার হাজার জোনাকি স্মৃতি মনের মধ্যে নিভছে জ্বলছে...
"কবির সমাধি'ও যেন এক
বেদনাময় কাব্যের সৌধ
যেখানে কখনও না কখনও
দেখা যাবে কোনো
মহাকালের আবর্তে হৃতসর্বস্ব
তার মানস-প্রিয়া এসে
অশ্রুর অঞ্জলি দিয়ে হারিয়ে
যায় কালের গহীন অতলান্তিকে...
শুধু কারো দীর্ঘ নিঃশ্বাস রয়ে যায়...
রয়ে যায় কারো একটি খোঁপার ফুল
কিংবা মৃদুল পায়ের একটু উষ্ণতায়
জেগে ওঠে হলুদ সবুজ পাতাবাহার..."
শাহনূরের প্রিয় গানটি আজ সত্যিই খুব চোখের জলে ভেসে, কান পেতে শুনছি—
"সাসোঁ ক্যি মালা প্যে সিমরু ম্যে, পিঁ কা নাম...."
যতদিন এই দেহে প্রাণের সঞ্চার থাকবে, শাহনূর তেমনই আমার সাথে সাথেই স্পন্দিত হয়ে চলবে... ... এখন থেকে বার বারই ওকে খুঁজতে ওর কবিতায় চলে যাবো...
"কোনো হেমন্তের লাল হলুদ ম্যাপল্ পাতার বনে
কেউ যদি "এই আসছি, বেঞ্চের ওপরে আমার হ্যান্ডব্যাগটা দেখো" বলে
ঝরা পাতার স্তুপে
তার মেরুন সুগন্ধি কার্ডিগান উড়িয়ে
আকাশের নক্ষত্র হয়ে যায়?
ধু ধু তেপান্তরের প্রান্তরে চলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে
কেউ যদি হাত নাড়তে নাড়তে অনেক অনেক দূর চলে যায়
যেখান থেকে আর তাঁকে দেখা যায় না?
কোনো একটা বিমান বন্দরের রানওয়ে থেকে
গর্জন করে "টেক অফ" করা জেটের পেটের ভেতর থেকে
কেউ যদি আকাশের ওপারে আকাশে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়?
দুর্দান্ত রোদ ভরা ঝিল মিল একটা দুপুরে যদি কেউ
আর কোনোদিন না আসে শিরীষ তলায়?
তখন কি কারো সমগ্র অতীত, তার বর্তমান, তার ভবিষ্যৎ
গলিত হিজল ফুল, বিল ঝিল নাম সর্বনাম, নীলাকার জামবন
এক মুহূর্তে আকাশ চেরা বিদ্যুৎ নিঃশব্দ গর্জিত বজ্রপাতে
অর্থহীন পৃথিবীটা ভেঙে জ্বলে চুরমার ভস্ম হয়ে যায়?" [অংশবিশেষ]
[কোনো এক কৃষ্ণপক্ষ রাতে / শাহনূর]
شيشير
- শিশির-এর অন্যান্য কবিতাপাতা
- এই পাতাটির ক্লিকসংখ্যা 631

সমরেশ 15 সপ্তাহ 4 দিন আগে
অবিশ্বাস্য! মেনে নিতে মন চাইছে না।
hiya 15 সপ্তাহ 4 দিন আগে
প্রিয়জন বিয়োগ ব্যাথায় নিজেকে বলছি
"নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবকঃ । ন চৈনং ক্লেদয়ন্ত্যাপো ন শোষয়তি মারুতঃ ॥"
কিছু না
দীপন চক্রবর্তী 15 সপ্তাহ 3 দিন আগে
Rest in peace, Shahnur bhai.
We love you!
প্রেম নেই কোনো, পাথর তাই আয়ু পেয়েছে
ঝর্না 15 সপ্তাহ 3 দিন আগে
এমন খবর কোনদিন পাব ভাবিনি। মনে হচ্ছিল, দীর্ঘ বিরতির পর শাহনুরদা আবার আসবেন। অনেক কথা, যেমন এখানে বলতেন, তেমন হবে।
কিন্তু যেমন ভাবি, ঠিক তেমন তো হয়না।
শুধু এটুকু বলতে পারি, মঞ্চকে ভালোবাসার আরেকজন মানুষ চলে গেলেন।
আপনার লেখায় আমাদের সবার মাঝে আপনি আছেন শাহনুরদা, থাকবেন।
নীল 15 সপ্তাহ 3 দিন আগে
ভালো থেকো শাহনূর দা ............
নির্মাল্য
শিশির 15 সপ্তাহ 3 দিন আগে
ড. শাহানারা মশিউর
(কবি ও সাহিত্য সম্পাদক)
“কবি শাহনূর আর নেই” মেনে নিতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল তাই বারবার পড়লাম। এ বিদায় এমনি বিদায় যা একবার হলে আর ফেরানো যায় না। স্বজন এবং প্রিয়জনরা শোকাহত হয়ে চিরকাল বয়ে চলে বিরহ বেদনার ভার।
কবির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি, আর শোক সন্তপ্ত পরিবারকে জানাই গভীর সমবেদনা।
সংবাদটি অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ও কবির প্রতি আন্তরিক মর্যাদা প্রকাশের মাধ্যমে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় কবি।"
মার্শাল ইফতেখার আহমেদ
(কবি, আবৃত্তিকার ও প্রাবন্ধিক)
খুবই শোকার্ত হলাম। খুবই। ২০২১ সালে তার কবিতা এই আসরে আবিষ্কার করে চমকে উঠি । ফ্রী ভার্সে লেখা তার কবিতার উপমা, অলংকরণ এবং রূপকল্প সৃষ্টি ছিল অনন্য । তুলনা নেই, আমার সাধ্যের অতীত, অনেকের সাধ্যের অতীত। ভাবতাম, কেনো এই কবিকে সবাই চেনে না ? কবি হিসেবে তার জনপ্রিয়তা অনায়াসে হবার কথা ছিল। তার কবিতা পাঠে পাঠক হৃদয় আন্দোলিত হতে বাধ্য। তাকে বলেছিলাম কবিতার বই বের করতে, বলেছিলাম, যেভাবে শুধু বয়সের কথা বলেন, সে অনুসারে now is the time, for you to publish your book of poems right away. রেখে যান আপনার সৃষ্টি আপনার সন্তানদের কাছে, তাদের সন্তানদের কাছে....আপনার নিকটজন, বন্ধু বান্ধব দের কাছে....একটা কিছু তাৎপর্যপূর্ণ তো রেখে বিদায় নেয়া হলো, তারা পড়ুক আর নাই পড়ুক....কিন্তু পৃথিবী তে তো রেখে যাওয়া হলো চিহ্ন!
খুব আবেগপ্রবন কবি ছিলেন। তার কবিতায় মন্তব্য করলে তার মনে খুশির জোয়ার দেখা দিত । দারুণ বন্ধুত্বে বলতেন অনেক কথা ।
আমার চেয়ে কবি আর ইসলাম আরো গভীর দুঃখ পাবেন। এই আসরে কবি আর ইসলাম ছিলেন তার কবিতার একান্ত ভক্ত, ছিল তাদের আন্তরিক কবি বন্ধুত্ব। কবির কোনো কবিতাই মনে হয় কবি আর ইসলাম পড়া বাদ দিতেন না । প্রােফাইলে কিছুই লেখা নেই । শাহনূর ছদ্মনাম কিনা তাও জানিনা। তবে তিনি অন্য একটি কবিতার সাইটে ছদ্মনামে লিখেন, তা উল্লেখ করতেন। কেমন যেন বুঝতে পারতাম তিনি বেশ বয়স্ক ছিলেন। মাঝে মাঝে অসুস্থতার কথা বলতেন। কিন্তু তিনি ছিলেন প্রকৃত কবির মতো তরুণের থেকেও তরুণ, দুর্দান্ত যুবক মনের প্রেমিক। মানব মানবীর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে কবিতা লেখা ছিল তার মূখ্য বিষয় । তার সাথে কথা বলে মনে হতো, কোলকাতা এবং বাংলাদেশ দুই জায়গাতেই তিনি বসবাস করে গেছেন ইউ এস এ তে চলে যাবার আগে। দুটো জায়গা নিয়েই তার স্মৃতিচারণ ছিল গভীর নস্টালজিক । ২০২১ সালের পুরোটা তার সাথে মন্তব্যে বড় বড় আলাপের পর কবিতা পড়লেও আর মন্তব্য করা হয়নি। দেখা যাচ্ছে ০৮/০৮/২০২৩ থেকে তিনি তার কবিতা পাতার মন্তব্য অপশন বন্ধ করে দিয়েছেন এবং সেভাবেই ২৬/১০/২০২৪ তারিখে শেষ কবিতা লিখেছেন। তারপর আজ এই খুবই গভীর দুঃখের সংবাদ । এবং দেখুন কী অপূর্ব দক্ষ কবি ছিলেন, তার একটি উদাহরণ দেই, প্রতিটি কবিতাই তার এইরকম সমৃদ্ধ, এই শোকের সংবাদ পেয়ে পড়লাম বহুদিন পর তার কয়েকটি কবিতা, ০৮/০৮/২০২৩ তারিখে মন্তব্য অপশন বন্ধ করে দেয়া প্রথম কবিতাটিই আমার সমস্ত পাঠ হৃদয়কে গভীর মুগ্ধতায় আবারো ডুবিয়ে দিলো:
কেউ বলেছিল
- শাহনূর
কেউ বলেছিল সে আমাকে লাল বটফল পথে নিয়ে যাবে একদিন
বেদিনীর ঝাঁপি থেকে কিনে দেবে কুরুবক মতো ঝিন্টিফুলের নোলক
পাছাপেড়ে শাড়ী আর যশোর চিরুনি।
আমার বিনুনি আজ সাদা বকফুল
কোনো ঘ্রাণ নেই তার,
তবু তার ভাষার সেই মাইল মাইল করুণ সিঁথি
বেয়ে শূন্যে হারিয়ে যাবে তার দু চোখের রথ, সেটা আমি জানি
মানি না মানি, সে নীহারিকা ভেবে এনে দেবে কিছু নরম রোদ
আমার বলয়ে, ছুঁয়ে দেবে সব সম্পত্তি তার কল্পিত প্রাসাদে
আমি তার নিঃশ্বাস শুনি, বিষণ্ণ গোধূলি বেলায় সে হোলি রঙ
এঁকে দেবে পাতায় পাতায়।*
তার কবিতায় করা আমার মন্তব্য থেকেও বোঝা যাবে তার সমৃদ্ধ কবিত্বকে:
"কপালে সেই ঘামের ফোঁটায় জ্বলছে পিদিম আলো" - বাহ! দারুণ চিত্র ফুটে উঠলো!
সবচেয়ে মন কেড়ে নিয়েছে বিরহবোধে "হ্রদের জলে রাজহংস খুঁজছে কি তার সাথী জ্বালিয়ে জোনাক বাতি?
বর্ণনা দারুণ হয়েছে। মন্তব্যে বুঝলাম কেন! পরিচিত রাজপ্রাসাদ ছোটবেলার! তাই হয়তো, এত দুর্দান্ত করে ফোটাতে পারলেন চিত্রকল্প! "সন্ধ্যা মালতি আর তুলসি তলায় রাখা পেতলের ঘট !" শিহরণ! "“গোপন জল ম্লান হয়ে হীরে হয় ফের”" অপূর্ব অনুভব! "নয়বা থাকলে শুয়ে “সরোজিনী” হয়ে তুমি সেই ভাঙ্গা সিঁড়ির ওপর" বাহ! দারুণ অলংকরণ, উপমা! গল্ গল্!! এস্রাজে অশ্রু মুছে মিশ্র পিলু - অনবদ্য! হৃদয় স্পর্শ করা রচনা! অশেষ শুভেচ্ছা।
"একটা গির্জায় কিসের ঘণ্টা বাজে স্তদ্ধ দুপুরে?" অনুভুতিটি দারুণ ফুটিয়েছেন, প্রগাঢ় নিঃসঙ্গতার মতো ! "সব নদী চলে গেছে বা আসেই নি কোনোদিন, শুধু একটা শাড়ীর আঁচল তার পথে ঘাটে নদীর কথা এঁকেছিলো ক'টা দিন।" অপূর্ব!
যেন সিসটিন চ্যাপেল! এঞ্জেলো কড়া রঙের দুর্দান্ততা, আপনার অতিকায় ক্যাথলিক চার্চ! আপনার কবিতার মাঝে দাঁড়িয়ে মাথা উঁচু করে দেখছি "“মাদার ম্যারির” স্নিগ্ধ দুটো চোখ! শাদা মার্বেলের মিম্বার,," অসম্ভব সুন্দর ফিলিং, চিত্রকল্প তৈরী করেছেন, চোখে জ্বল জ্বল করছে আপনার বর্ণনার গুনে!
রাইটার গুলো জীবন ব্যবচ্ছেদে চমকে দেবার মতো বক্তব্য উপস্থাপন করে। আপনিও দেখে উঠলেন, তেমনি এক প্যারালাল ইউনিভার্স, যার অপূর্ব বর্ণনা প্রথম স্তবক! এরপর অপূর্ব তিমি উঠে আসে শিষ দিতে দিতে স্মৃতি বিষ তুলে নেবার জন্য! সেখানে মিঠেল রূপসী শরীর নীল আভা প্রভা, আহ! ঐ জল-শিষ বইয়ে দেবে মসলিন মখমল হাওয়া.... এ দুর্দান্ত কাব্যিকতা নিয়ে গেলো স্বপ্নিলতার তুঙ্গে উতুঙ্গে! ! মার্ভেলাস কবি! সুপ্রীম চিত্র রূপ কল্প!
-----
কবি যেন থাকে তার কবিতার মতো দারুণ সুন্দর রূপকল্পের কোনো দেশে, চির শান্তির বিশ্রামে। বিদায় কবি।
Kumu 15 সপ্তাহ 3 দিন আগে
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন । আল্লাহ উনাকে বেহেস্ত নসির করুন । আমীন
কতটা কষ্ট হচ্ছে লিখে বেঝাতে পারবো না।
এই আপডেট শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না বলেই আরও বেশী কষ্ট লাগছে । একজন অদেখা মানুষ / কবি শুধু মাত্র আলাপচারিতায় কতটা আপন করে নিতে পারে, তা শাহনূর ভাইর পক্ষেই সম্ভব হয়েছে ।
শাহনূর ভাইকে সব সময় মনে পড়বে …উনি এই মুক্ত মঞ্চে কবিতায় আর কবিদের মাঝে অম্লান থাকবেন …..
কবির শোক সন্তপ্ত পরিবারকে জানাই গভীর সমবেদনা।
সমরেশ 15 সপ্তাহ 2 দিন আগে
@শিশির, আপনার সংযোজন বারবার পড়লাম। কৃতজ্ঞতা।
পৃথা 15 সপ্তাহ 2 দিন আগে
আলোকচিত্রের সংযোজন মানুষটিকে যেন আরো, আরো নিকটের করে তুলল, যতদূর জানি সবাইকেই উনি অফুরন্ত প্রেরণা দিয়ে গেছেন
আর কবি শাহনূরের কবিতাগুলি অশেষ, বারবার পড়তে হয়
মধুছন্দা 15 সপ্তাহ 2 দিন আগে
কবি শাহনূরের স্নেহস্পর্শ আরো পাবোনা, ভাবতেই মন বিষাদে ভারাক্রান্ত হচ্ছে
শ্রীহরি গলগ্রহ 15 সপ্তাহ 2 দিন আগে
শেষরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে কেনো জানি প্রথমেই মুক্তমঞ্চ খুলে খবরটা চোখে পড়লো। চারপাশের অন্ধকার যেন আরো খানিকটা জমাট হয়ে এলো।
দেখলাম মাস খানেক আগেও আমার লেখাতে তিনি তাঁর মন্তব্য লিখেছেন।
জানি, এই অকস্মাৎ নেই হয়ে যাওয়া মেনে নিতেই হয়।
জানি, সেই মেনে নেয়া কখনোই সহজ হয় না।
শুভেচ্ছা রইলো শাহনুর। চরৈবেতি।
ASIT KUMAR ROY 15 সপ্তাহ 2 দিন আগে
আলতো নতমস্তকে অবলোকন করে চলেছ,
বহু দিনের চেনা জীর্ণ একটা বাঁশের সাঁকো
মনে মনে এই বুঝি আশঙ্কা করেছিলে
হুরমুড়িয়ে ভেঙে পড়বে নদীর ঘোলাজলে;
বিশ্বাস করিনি তোমার ঐ সাবধান বানী।
আমি তাই মনে মনে বলেছিলাম
উঁহু যেন কোথাকার প্রখ্যাত এক নৃতত্ত্ববিদ!
কদিনেই তোমার কথা সত্যি হয়ে গেল।
ভাবলাম তুমি ঠিক কথায় বলেছিলে।
রাতের অন্ধকারে মুখগুঁজে হারিয়ে গেল।
প্রশ্ন আমার একটাই
সেই সাঁকো একদিন না একদিন ভেঙে পড়তই
যা পুরানো তা একদিন অতীত হয়।
ওখানেই আবার মানুষের প্রয়োজনে
নতুন নামে নতুন একটা সেতু হবে।
তাহলে তোমার কি হারাল বলবে?
দুহাত পিছনে রেখে পলাশরাঙা মুখে
অনর্গল নীলকাশ সাক্ষী রেখে বলে গেলে।
যা চলে যায় তা আর ফিরে আসেনা ঠিকই,
তবু গোলকচাঁপা সুবাসিত প্রেম
বোতামখোলা হৃদয় বেলায় আছড়ে পড়ে
স্মৃতির গোপনঘরে তখন জারুল ফুটতে থাকে
ঐ সাঁকোই একদিন নিবিড় সাক্ষী হয়েছিল
তাঁর সাথে আমার প্রথম পরিচয়।
নদীর স্রোতেই মিশে গিয়েছিল
তাঁর ঝরঝর ঝর ঝর্ণাধারা হাসি;
বকুলের মালা পড়িয়ে গান শুনিয়ে ছিলাম
''এই কথাটি মনে রেখো''
তারপর... অসমাপ্ত গল্পকথা শেষটা বলবনা।
নিজের মতন করে সাজিয়ে নিও চুপকথা।
তাই...
তোমার নামে নাম দিয়েছি আমার কলম'কে
সাথে সাথে পাশে নিরন্তর থাকবে বলে;
ম্যাপল গাছের পাতা কোথায় পাবো?
অন্তরজালে খুঁজে তাই ভাসালাম।
তুমি তখন হলুদ পাপড়ি ভাসা ঝিলের জলে
রাজহংসের মতন দিব্যি দেদার সাঁতার।
যাবার আগে পিছনপানে ফিরে
অস্ফুটে শেষকথা কিছু কি বলেছিলে!
শিশির 15 সপ্তাহ 1 দিন আগে
"এই মানুষ টি যেনো সবারই আপন ছিলেন। কিভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হয়, কাছে টানতে হয়, তা বোধহয় তার চেয়ে ভালো কেউ জানতো না। আমার সাথে মেইলও মাঝে মাঝে কথা আদান প্রদান হতো। তাঁর জন্মস্থান ময়মনসিংহে হওয়ায় আমাকে বোধহয় বেশিই ভালোবাসতেন। মাঝে মাঝে বলতেন, শহরটাকে দেখতে ইচ্ছে হয় খুব। একবার তাঁর বাগানের অনেকগুলো ছবি আমাকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। আমার ছেলের অসুস্থতার সময় তিনিও আমাকে স্বান্তনা দিয়েছেন, মেয়ের সাথে কথা বলে আমার ছেলের অসুস্থতার জন্য তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন। সবই আজ স্মৃতি!
অথচ, এই মানুষ টিকে আমি কোনোদিন দেখিনি। কথাও হয়নি ফোনে! তবুও যেনো ছিলেন আপনার চেয়ে আপন। তাঁর কবিতায় অন্য রকম অনুভূতি প্রকাশ করতো পাঠকের মাঝে।
খুব খারাপ লাগছে তাঁর মৃত্যুর কথা শুনে। আল্লাহ পাক যেনো বেহেশতবাসীদের একজন করেন। আমিন।
সম্মানিত কবি, আপনি ওপারে ভালো থাকুন।"
— কবি আর ইসলাম
"আত্মমগ্নতায় বর্তমানের প্রকৃতি-পরিবেশ, সমাজ সময়ের অনুভূতিগুলি কবি মানসে চমৎকার ভাবে ধারণ করে মনোহর কাব্যশৈলীতে মুন্সিয়ানায় উপস্থাপন করে পাঠককে মোহিত করতে পারার বিরল গুণের অধিকারী কবিকে আমরা অমোঘ মৃত্যুতে এই আসরে হারালাম।
পরপারে প্রয়াত কবির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।"
— কবি মোহম্মদ খায়রুল কাদির
"আসরের শ্রদ্ধাবান প্রিয়কবি শাহনূরকে হারিয়ে মর্মাহত- দুঃখীত । তাঁর কবিতায় তাঁর স্মৃতি অমর হয়ে থাক । জগতে তিনি মানবতা নিয়ে যেটুকু তাঁর সাধ্য মত সমাজ জাগরণে যোগদান দিয়েছেন, তাঁর অবদানকে যেন আমরা না ভুলি । তাই কবির স্মৃতির জন্য যে সব সুধীগণ মহৎ উপায় নিচ্ছেন- তার জন্য অশেষ সাধুবাদ ।"
— কবি গোপাল চন্দ্র সরকার
"দেখা হয়ে গেল ছবিখানা।
বোঝা গেল এইবারে,
কেমন সেই স্মিত হাসি খানা ____
অনেক ধন্যবাদ জানাই ????❤️????????
— কবি রত্না দেব বিশ্বাস ভৌমিক
"কবি শাহনূরের "কলাবতী স্টেসান" নামে একটি কবিতা পড়েছিলাম ২৬/৭/২০২৩ এ। কবির মৃত্যুতে গভীর শোক সমবেদনা জানিয়ে মন্তব্য কলামে তারই কবিতাটি নিবেদন করছি
কলাবতী স্টেসান
কার ছবি জেবে নিয়ে জীবনের চেন টেনে
ট্রেনটাকে থামিয়ে দেব
নদীটার শেষখানে, কলাবতী ফুল নেই যেখানে ?
কাকে দেব বিনি সুতা লাল ঘুড়ি,
একঝুড়ি ইরানী গোলাপ
সেগুলোকে ভালবেসে শূন্যে উড়িয়ে দেবে সে কিশোরী হবার ভাণে,
কলাপাতা শাড়ি কলাবতী জামা আর এ্যারোমা তাঁর
যেন নেচারাল জৈবিক জাফরানি প্রগাঢ় নিবন্ধ লেখে বাতাসের গায়।
চব্বিশ ক্যারাট তার মনে ধরেনি কোনোদিন, সে একদিন সাঁঝে
মাধবী লতার গান গেয়ে এ্যাতোটা কাছে এসেছিলো যে
মনে হয়েছিলো, আমার হাতের রজনীগন্ধা গুচ্ছ
নিজেকে তুচ্ছ ভেবে নিজস্ব ঘ্রাণের বার্তা ফেলে চলে গিয়েছিলো
কালে মহকালে, এবার আমাকে বলো কবে তুমি এনে দেবে
ঢাকা থেকে মনিহারি বেলোয়ারী আর কস্তাপাড় শাড়ি ...
এই বিদেশে?
এই বয়সে এই ঘর বাড়ী ছেড়ে,
জীবনের সব ঘাট, সব হাইওয়ে বেয়ে সমস্ত বিপণী এখন আর
খোঁজার ক্ষমতা নেই, তাই এই শেষ ট্রেনে টিকিট বিহীন
উঠে পড়েছি, যদি এটা একদিন কোনোক্রমে থেমে যায়
কলাবতী নামের একটা স্টেসানে,
যেখানে পাওয়া যেতে পারে এক ঝুড়ি বেলোয়ারী
আর কস্তাপাড় শাড়ি ……………।।
— কবি শরীফ এমদাদ হোসেন
"আর এক দীপ নিভে গেল তল কালের গহ্বরে, কত স্মৃতি তার সার ও অসার মনে পরে বারে বারে, মনে পরে বারে বারে।।এই সসাগরা বড়ই নিস্ফলা ফলায় তো প্রাণ বায়!! কেড়ে নেয় তারে কালের বিধায়-হরণেতে নাই দায়!! জানি একদিন লিপ্ত কালের-সফরেতে যাব দূরে, যেথায় ধরণী আসমান তার দিগন্তে বাজে সুরে।।পুঞ্জ মেঘের ওপার দুয়ার সীমা হীন প্রেম তার, আসিতেছি বেগে মিলিতে তোমায় সমাপনে প্রাণ তায়।।
তার বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।"
— কবি সঞ্জয় কর্মকার
"যে চলে গেছে সে তো আর ফিরবার নয়। এই আসরের অন্যতম কবি শাহনূরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। কবি শাহানূর বেঁচে থাকবেন তার সৃষ্টির মাঝে।"
— কবি শেখ মো: খবির উদ্দিন
শিশির 13 সপ্তাহ 6 দিন আগে
আমাদের সবার প্রিয় মানুষ, কবি শাহনূর এর স্মরণ অনুষ্ঠানের লাইভ স্ট্রিম লিংকটি দেয়া হলো... ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ বুধবার, সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত (ওহাইয়ো স্টেট সময়)
বিদগ্ধ পাঠক কবিবন্ধুগণ উক্ত অনুষ্ঠানে যুক্ত হতে পারবেন।
https://my.gather.app/remember/mesbah-ahmed
আখেরুল হক 14 সপ্তাহ 3 ঘন্টা আগে
তারে আর দেখা যাবে না
এ আড়াল বড় দূর
আল্লাহ শাহনুর ভাই কে জান্নাত বাসী করুন
আমিন
আখেরুল হক
বিশু গাঙ্গুলী 13 সপ্তাহ 5 দিন আগে
শাহনুরের আমার বন্ধু 2011 থেকে |
গত তিন মাস ছিলাম বিদেশে | কাল রাত্রে পেনসিলভানিয়া ফিরেছি, আজ সকালে (4 টায়) উঠে মুক্তমঞ্চ খুলে এই খবর আমাকে মর্মাহত করল |
আমি আশা করছিলাম যে ও ভাল হয়ে উঠবে এবং এখানে এসে আবার সবাইকে নাচিয়ে তুলবে |
আমাকে বার বার বলত "বিশুদা, এসো তোমার plane চালিয়ে | আমাকে নিয়ে চলো মেঘের দেশে |"
আজকে তুমি নিজেই পাইলট, নিজেই ঘুরছ মেঘের দেশে |
আল্লাহ তোমার যাত্রা শুভ করুন |
লোকা সমস্ত্যা সুখীনো ভবন্তু!!!!
শিশির 13 সপ্তাহ 4 দিন আগে
তুমি মেঘের দেশে ভালো থেকো, প্রিয় অ্যাল...
১১ ডিসেম্বর বুধবার, তোমার স্মরণ অনুষ্ঠানটি লাইভ দেখলাম... দেখলাম, ওখানে তোমার কথা বলতে গিয়ে, তোমার কত ছাত্র, সহকর্মী, স্বজন পরিবার, কীভাবে হাসতে হাসতে কাঁদছে...! কীভাবে তোমার পুত্র রিউবেন, তোমার কবিবন্ধুদের এই পোস্টে লিখিত প্রতিক্রিয়া পাঠ ক'রে, অনুষ্ঠানে আগত অতিথিগণকে শোনাচ্ছে... কত কত স্মৃতি সম্ভার, কত তোমার হাতের স্পর্শে এখনও কত বিবিধ ফুল ফুটে রয়েছে তোমার ব্যাকইয়ার্ড বাগানে, কত তার নাম, কত কত তার রঙ...!
বছরের পর বছর কেবলই, তোমার সাথে কবিতায় মন্তব্যের ক্ষেত্রফলেই কথা হয়ে চললো... মন্তব্য কিংবা প্রতুত্তর দিলে এখন আর অপেক্ষায় আমাদের দুজনের কাউকেই বসে থাকতে হবে না, আর কেউ বলবে না, "তোমার মন্তব্যটি একটু এদিক ওদিক করে নিলেই একটি উৎকৃষ্ট কবিতা হবে... হায় মেঘকিশোর...! এমন এভাবেই বুঝি তোমার প্রেম জেগে থাকে...!
hiya 13 সপ্তাহ 4 দিন আগে
আমরা কেই বা কাকে কতটুকু চিনি !
বলা হলো না কথাটা - কতটুকুই বা কথায় বলতে পারি !
- এক মানুষ জল - অনেক জল - কবি - unfathomable !
কথা কৃপণ - সেজন্য কথা যেখানে এসে থামে, কবিতা এসে হাত ধরে মানুষের - বলে এস চেনাই - এই জন্যই কবিতা কোনোদিন মরবে না -- !
শাহনূর এতো চেনা - কিন্তু কতটুকু চিনতাম ! আমার কাছে সে এক স্বপ্নকথা, সাঁঝতারা !
এক স্বপ্নকথার মতো প্রাচীন প্রবাদ হয়ে
বিশাল আকাশের কোণে জুড়ে এক স্মিত সাঁঝতারা !
রাত চুপচাপ হতে হতে একান্ত হয়ে এলে
কখনো পুবের বনে এস সখা,
মুগ্ধ কিছু শিশিরবিন্দু, অপেক্ষায় থেকে গেছে
থেকে থেকে তারা
তোমার সংকেতগুলি মেখে নেবে
অদ্ভুত ঈশ্বরকণারা, দিগন্তের পারে
তোমার অপেক্ষায় অপার করুণা হয়ে
কবিতার মতো সুন্দর হয়ে সেজে থাকে
আলো, আলো আলো, আলোর সমুদ্রে
আলোর রাজার দৃষ্টি হয়ে থেকে যেও
এক স্বপ্নকথার মতো প্রাচীন প্রবাদ হয়ে থেকে যেও সখা
বিশাল আকাশের দিকে স্মিত - সাঁঝতারা -
ভোর হয়ে এলে, কখনো পুবের বনে এস সখা,
মুগ্ধ কিছু শিশিরবিন্দু, তোমার অপেক্ষায় থেকে গেছে --
প্রিয় সাঁঝতারা !
ASIT KUMAR ROY 12 সপ্তাহ 1 দিন আগে
তাঁর জন্য এ এক দুরন্ত প্রকাশ
সে ছিল যেন এক বিশাল বটবৃক্ষ।
তাঁর কাছে এলেই
শান্ত স্নিগ্ধ ছায়ার মায়া বন্দী হয়ে যাই।
বিশাল এক নীড় বাঁধা নিরপত্তার বন্দর।
তাঁর পাতার সবুজে সবুজে ছড়ানো ভালবাসা
ফুলের রেনুতে রেনুতে অপার মুগ্ধতা
বীজের কণায় কণায় আগামীর সম্ভার
বুকের নিবিড়ে মিলে মিশে
আনন্দগান সদায় গেয়ে যায়।
ভালো আছি ভালো থেকো প্রিয়
কবিতার খাতায় আখর কেটে রেখো।
দুরন্ত পাখীর ডানায় পথ খুঁজে নিও
দহনদিনে এসে বৃষ্টি হয়ে ঝোরো।
আকাল এলেই আমি তোমায় খুঁজে বেড়াই
হিম জড়ানো প্রাতে ঘাসের ডগায় জাগো।
ঘুমের ভিতর স্বপন পথে তোমার সাথী হই
আবার বলি যেখানেই থাকো ভালো থেকো।
আকাশ নেরুদা 11 সপ্তাহ 5 দিন আগে
বহুদিন পরে এসেই এই দুঃসংবাদটি শুনে ব্যথিত হলাম । শাহনুর নামটিতে ক্লিক করে আর কোন কবিতা পড়তে পারবো না , আমাদের কবিতায় শাহনুর দা আর আসবেন না , এই বিষয়টা ভেবে বড়ো কষ্ট পেলাম । শান্তিতে থাকুক শাহনুর দা এই প্রার্থণা করি ঈশ্বরের কাছে । ওম শান্তি !!
নতুন মন্তব্য পাঠান