বিরল প্রাসাদ

ভাস্কর ধর
এমন একটা স্থান
যেখানে কান পেতে থেকে মরূদ্যানের ঘ্রাণ
নিঝুম হ্রদের জল, রূপালি নূপুর,
খেঁজুর পাতার সিম্ফনি, করুণ শঙ্খধ্বনি,
সেলফোন রিং নেই কোনো, স্বপ্নহীন নিঝুম ঘুম,
জাগ্রত মঠের বাণী, আঁধারের গান, ডোরাকাটা জেব্রা ক্রসিং,
ধপ করে থেমে যায় সব চলাচল আসমুদ্র হিমাচল।
যেখানে একবার তাবু গেঁথে এলে
কেউ কোনোদিন আগের মতন আর শরীর মনন নিয়ে ফিরে আসেনা
কি যেন ফেলে এসেছে সে আমৃত্যু আজীবন
সমর্পণ
মহুয়ার ভাঁড়ে যমুনার পারে সেই বিরল প্রাসাদে !
নাম্নেই 1 সপ্তাহ 6 দিন আগে
ধরলাম! জয়গুরু! ফ্রেশ, ইউনিক, অনবদ্যতম
শরীরে উটকো ঝামেলা একেবারে কাবু করে ফেলেছে যেরকমটা কিনা কোনোদিন ছিলনা দু দিন আগেও, আশা করি এ কবিতা ওষধির কাজ করবে
ভাস্কর ধর 1 সপ্তাহ 6 দিন আগে
লাস্ট নাম "ধর" থেকে "ধরলাম"! একটু সময় লাগলো শব্দটাকে বুঝে নিতে। তবে অনেকটা পাঠশালার ক্লাশ টু থ্রির কথা মনে করিয়ে দিলো। নাবালিকাহীন সব নাবালক, যে যতো বেশি শান্ত এবং নির্বাক, তাকে নিয়ে ততোটাই কৌতুক! দু একটা স্যাম্পল দিই, "বাবা না বাজান" (আশা করি এটার উৎসটা বুঝে নিতে পারবেন, এবং বাজান না বলে বাবা শব্দটাই উচ্চারিত হতো বাসায়), "দারোগার পোলা" (বাবা তখন অফিসার ইন চার্জ), "বাইঠ্যা" এটা এসেছিলো একজন টিচারের মনোহর অভিধান থেকে, মনে মনে বাবাকে দোষ দিতাম, উনি কেন আমাকে দুই ক্লাশ ওপরে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। পরে জানলাম, ওই টিচার মহাশয়কে থানার মসজিদের সামনে আকাম কুকাম জাতীয় কিছু একটা করার জন্য বাবার অফিসে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। এই সব দুঃখের কথা যখন এলোই, আরেকটু বরং বলি, মৌলবি স্যার হাতের তালুতে বেত নাচাতেন আর সুরাহ বলতে আদেশ দিতেন, আমি আমতা আমতা করলে উনি বলতেন, "পাদলে ঘোড়া কি হবে, মেদিনীপুর যাইতে হবে", আমি মাটির সাথে মিশে যেতাম, মুখস্ত সুরাহ ভুলে যেতাম!
আরো দুঃখের কথা , মুসলিম ছাত্র কম বলে অনেকগুলো ক্লাস একসাথে ধর্ম ক্লাশ করা হতো, তাতে আমার ছোটো ভাইও ওর দাদার করুণ অবস্থা দেখে বাসায় ফিরে সুন্দর করে বর্ণনা করতো, ও দেখতে পেতোনা মা'য়ের চোখের পানি, আর বাবার চোখে আগুন, তোমার বড় ছেলে কেন সুরাহ বলতে পারেনি? অবাক কথা, মৌলবি স্যারের অশ্লীল বাক্যটা উনি এড়িয়ে গেলেন। এবং অবশ্যই ভুলে গেলেন যে উনি নিজে কোনোদিন আমাকে সুরাহ পড়ান নি, আমার স্বল্প শিক্ষিতা মা আমাকে বাংলায় আরবি ছত্রগুলো লিখে দিতেন, যদি কোনোদিন বাবা পড়ার টেবিলে বসতেন, উনি কেবল পাস্ট টেন্স, প্রেজেন্ট টেন্স, ফিউচার টেন্স মুখস্ত করতে আদেশ দিয়ে চলে যেতেন বন্ধুদের সাথে কন্ট্রাক্ট ব্রিজ খেলতে অফিসারস্ ক্লাবে। আমি গুনগুণ করতাম "গো, ওয়েন্ট, গন"; বাবা "গন" হবার সাথে সাথে আমি ড্রয়ারে লুকিয়ে রাখা শুকতারা, বা কোনো ছড়ার বই খুলে পড়তাম,
"আমি যদি হই ফুল, হই ঝুঁটি-বুলবুল হাঁস
মৌমাছি হই একরাশ,
তবে আমি উড়ে যাই, বাড়ি ছেড়ে দূরে যাই,
ছেড়ে যাই ধারাপাত, দুপুরের ভূগোলের ক্লাস।
তবে আমি টুপটুপ, নীল-হ্রদে দিই ডুব রোজ
পায় না আমার কেউ খোঁজ।
তবে আমি উড়ে-উড়ে ফুলেদের পাড়া ঘুরে
মধু এনে দিই এক ভোজ।
হোক আমার এলো চুল, তবু আমি হই ফুল লাল
ভরে দিই ডালিমের ডাল।
ঘড়িতে দুপুর বাজে; বাবা ডুবে যান কাজে;
তবু আর ফুরোয় না আমার সকাল।"
দুঃছাই, কেন আমি এইসব ইতিহাসের পাতা খুলে বসলাম? মাফি মাঙ্গি। আপনার একটা ক্ষুদ্র শব্দ "ধরলাম" আমাকে কোথা কোথা নিয়ে গেলো, সেই "তবে আমি টুপটুপ, নীল-হ্রদে দিই ডুব রোজ
পায় না আমার কেউ খোঁজ।" সেই হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো, একটি ইনোসেন্ট বালকের অতৃপ্ত এবং মনে মনে আমার-সাথে-কেন-এমুনটা-হয় প্রশ্নের দুনিয়ায়!
আপনি খুব সম্ভব এই ঘরে আর ফিরবেন না। আমি একজনকে জানি যিনি ডাক্তারের ট্রিটমেন্টকে সর্বক্ষণ অবহেলা করে কষ্ট পেতে ভালবাসেন! উনি জানেন না যে ওনার কষ্টে কিছু কিছু মানুষদেরও কষ্ট হয়, ওনারা ঠিক কী করবেন বুঝতে পারেন না!
এই যাঃ, একদম ভুলে গেছলাম, আপনাকেতো ধন্যবাদ দেয়া হয়ে ওঠেনি মন্তব্যটার জন্য! এবার দিলাম। সুস্থ হয়ে উঠুন, মনেপ্রাণে এই কামনা করছি!
নাম্নেই 1 সপ্তাহ 6 দিন আগে
এই ঘরে আর ফিরবো না কে বলল? আর, এটা এমন সমস্যা যে ওষুধ না খেয়ে উপায় নেই, তাই খাচ্ছি ... একেবারে নিয়ম করেই, তবে এক ‘হপ্তা’র মধ্যে ঠিক না হলে ভাবছি মঙ্গল চলে যাব, সেটা আবার এই পার্থিব দেহ নিয়ে হবে-টবে না ... আপাততঃ বুঁদ হয়ে আছি আপনার ‘সেই হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো’য় ... খুব আশ্চর্য দুঃখের, আমার ব্যক্তিগত দুঃখের, যে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এইসব কিছুই জানবেনা, জানলেও অন্তরে বুঝবেনা ...
টম 1 সপ্তাহ 4 দিন আগে
"কেউ কোনোদিন আগের মতন আর শরীর মনন নিয়ে ফিরে আসেনা"
মনন মেলে তো শরীর না, শরীর তো মনন না
আরব্যরজনীতে পড়েছিলামঃ
"মনে হচ্ছে যেন পাখির ডানার ওপরে ভর দিয়ে তুমি উড়ে বেড়াচ্ছ। এক টুকরো ধুলো পর্যন্ত পড়ে না তোমার গায়। কত অল্প খাওয়ায় তোমার পেট ভরে। তোমার গালে চুমু খেতে পেলে বেহস্তেও ঘুমোতে আমি রাজি নয়। হে প্রিয়তমে, যখন তুমি আমাকে তোমার ওই দুটি হালকা বাহুলতা দিয়ে জড়িয়ে ধর তখন কী একটি অপূর্ব আবেশে আমার মন ভরে যায়। তুমি চড়াই পাখির চেয়েও চঞ্চল, হরিণীর চেয়েও তুমি প্রাণবস্ত। বাঁশের মত যেমন করে ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা তোমাকে বাঁকানো যায়, ভাঙার ভয় থাকে না এতটুকু। আর তোমার হাসি? সে তো তোমার মতই হালকা । আর তোমার শরীরটা হালকা বলেই তো ইচ্ছামত তোমাকে আমার বুকের ওপরে টেনে নিতে পারি। আমার উলঙ্গ হাঁটুর ওপরে, হে আমার
প্রিয়তমে, তুমি পশমী চাদর। ওরে ও ধ্যাবড়া মেয়ে, তোর ওই থ্যাবড়া দেহ কি কোনদিন পুরুষদের মনে আগুন জ্বালাতে পেরেছে? পারেনি, কোনদিন পারেনি। পেরেছে আমাদের মত পাতলা মেয়েরাই। আমাদের মত পাতলা মেয়েরাই পুরুষদের পাগল-ছাগল বানিয়ে দেয়, তাদের নামিয়ে আনে আমাদের পায়ের কাছে। আঙুরলতা যে কঞ্চি জড়িয়ে ওপরে ওঠে পুরুষরাও তেমনি আমাকে জড়িয়ে ফুটতে চায়, আমার সর্বাঙ্গ চুম্বন করতে-করতে তার প্রেম কুসুমকে ফোটাতে থাকে। সজল-নয়না ময়না পাখি আমি।"
টম 1 সপ্তাহ 4 দিন আগে
মহুয়ার ভাঁড়ে
যমুনার পারে
বেশক্!
খায়রুল আহসান 1 সপ্তাহ 15 ঘন্টা আগে
"ধপ করে থেমে যায় সব চলাচল আসমুদ্র হিমাচল" - চমৎকার!
ভালবাসা ভালবাসি....
নতুন মন্তব্য পাঠান