৩৭ নম্বর জলরঙ


আসার পথের লাইটপোস্টের
সবগুলো বাল্ব ভেঙ্গে, অন্ধকারে,
এই মুহূর্তে আমি, ওর নিষিদ্ধ প্রীতম, বসে আছি,
রেল-লাইনের স্লিপারে,
দু’পা ইংরেজি উলটো ওয়াই…
আকাশে দূরে দূরে একটি শহর,
নগরের বেদনা যেমন গুঞ্জে
মেঘের ট্রেন একই দিকে ঝলসে বারবার
স্বপ্নের সমুদ্রে ডুবে পড়ছি আমি,
রাত্রির ট্রেনে, সবাই একলা থাকে
আমি ও সে সেই শহরে নির্ঘুম জেগে থাকি...
জেট-ব্ল্যাক রাত্রি,
দু’ধারে অ্যাফ্রিক্যান নিগার বাবলা গাছ,
হাতে এক তালু সিদ্ধি, সাথে বাদামী-চিনি
মনে মনে যতই ফকির হই না কেন !
নির্জলা ভিখারী…!
হাতের কব্জির সুইস-ওয়াচ্
আমাকে সাময়িক রেখেছে…
ওরে পাগল! বনের বাঘে খায়নি আমায়,
মনের বাঘে খেয়েছে…
দুপাশে ছড়ানো ভাঁঙ্গা পাথরের নীচে,
মুদ্রাস্ফীতির আস্ফালনে
লাল পিঁপড়েরা তৈরি;
নিমন্ত্রণ আছে যে আজ ওদেরও…
আজ মহা ধূঁমো-ভোজ হবে!
মন ফর্সা করতে ঝেড়ে কাশি;
নিখোঁজ আমি অতিথি
এবং আমিই আপ্যায়ণকারী !
যা যা ভাবছি তা সব পরিস্কার, স্পষ্ট, নিরবিচ্ছিন্ন…
এসি রুমে যে চিন্তা, এখানেও তাই,
সমান্তরাল রেল-লাইন
‘ও’ কেন না বলে,
আমাকে নিষিদ্ধ করে চলে গেলো!
কোথায়, কোন্ অপরিচিত জনারণ্যে
আমাকে বিসর্জন দিল সে…
প্রশ্নটা আমার, উত্তরটা আমাকেই জানতে হবে!
কে জানাবে তা অধর্তব্য…
মোমবাতি জালিয়েছি, সিদ্ধি আর কষ্ট
একসাথে পিষে নিয়ে কল্কে প্রস্তুত;
[ মশায় রক্ত খাচ্ছে...! ]
নিখুঁত রাংতার প্যানে
বাদামী-চিনি চড়বে একটু পরেই
লেভি’স-এর কোমরে আঁড়-বাঁশী,
আমার ঠোঁটের একশো চুমুতে ও নারী হবে…
কল্কে ফেটে গেলো, চিনির স্টক শেষ প্রায়,
সহস্রাকাঙ্খিত হৃদপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে…
রাত্রির কালো অন্ধকার
ক্রমান্বয়ে নীল হতে শুরু করেছ…
একটা অত্যুজ্জ্বল আলোর ফোঁটা
চোখে এসে পড়লো,
ধীরে ধীরে সে আলো আর কিছুতেই
চোখে নেয়া অসম্ভব হয়ে উঠছে…
কুমারী বাঁশী মুহূর্মুহূ কাঁদছে যন্ত্রণায়, নির্বিঘ্নে ,
আর সে কান্না আরেকটা কান্নার সাথে সমতানে উঠলো হঠাৎ!
ইস্পাত-তীক্ষ্ণ কান্না…
এ কোন্ বেঘরের আর্তনাদ !
…একটা ভীষণ ধাতব-ধাক্কা,
হাড়, মন, মাংস – গুড়িয়ে, ভেঙে, কচ্লে তালগোল;
বাঁশী থামেনি …………………………………………………
আমার কানে অপার্থিব স্বরে কে বলল যেন,
যাচ্ছি / চলে যাচ্ছি / আর খুঁজো না / দেখা হবে না / বি…দা…য়
কালো আলোয় দেখলাম,
আমার মনের ঘর, চোখের জান্লা দিয়ে উড়ে চলে যাচ্ছে…দূরে কোথাও…
উত্তরীয়ঃ
নীল-বিষাচ্ছন্ন কেউ তার আশংকিত মনের প্রাক-দূর্ভাবনা সমূহ একে একে বর্ণনা করে যাচ্ছে আর মুখোমুখি উপবিষ্ট তার অনন্যোপায় সহগামী নির্বাক শ্রোতা হয়ে কাল-রাত্রিক্ষেপণ করছে। পার্থিব মায়া-মোহগ্রস্থ উত্তরাধুনিকতায় কি অজানিত বিষয়ের অবতারনা হতে পারে এ তারই কল্প-চিত্র, এ স্থলে মাঝ-রাত্রির সালোক-রেল এবং তাৎক্ষণিক দূর্ঘটনা সকলই মেঘের উপর মেঘ… সকলেই যদি নীল-কন্ঠ হবে, সর্বত্রই যদি দর্শক-শ্রোতাকে কুশীলবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয় তবে তো কাব্য-কারিগরের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়া নিশ্চিতপ্রায় … এই পরাবাস্তব লেখ-চিত্র-কর্মখানি আমারই এক উহ্য সত্তার প্রয়োজনাতীত দুষ্কর্মকান্ডের অনতিবিলম্ব বিবরণ, বাস্তবের কোনো স্থান, কাল ও পাত্রের সাথে এর বিন্দুমাত্র কোনো প্রকার সংশ্রব অবর্তমান …
شيشير
- শিশির-এর অন্যান্য কবিতাপাতা
- এই পাতাটির ক্লিকসংখ্যা 235

এনা 3 সপ্তাহ 1 ঘন্টা আগে
দারুণ শিশিরদা
রাঠোর 3 সপ্তাহ 1 ঘন্টা আগে
"জেট-ব্ল্যাক রাত্রি,
দু’ধারে অ্যাফ্রিক্যান নিগার বাবলা গাছ,
হাতে এক তালু সিদ্ধি, সাথে বাদামী-চিনি
মনে মনে যতই ফকির হই না কেন !
নির্জলা ভিখারী…!
হাতের কব্জির সুইস-ওয়াচ্
আমাকে সাময়িক রেখেছে…
ওরে পাগল! বনের বাঘে খায়নি আমায়,
মনের বাঘে খেয়েছে…
দুপাশে ছড়ানো ভাঙ্গা পাথরের নীচে,
মুদ্রাস্ফীতির আস্ফালনে
লাল পিঁপড়েরা তৈরি;
নিমন্ত্রণ আছে যে আজ ওদেরও…"
শতকরা একশোভাগ সম্মোহিত করে দিলেন কবি
রাঠোর 3 সপ্তাহ 1 ঘন্টা আগে
উত্তরীয়ঃ অংশ ইন্টারেস্টিং, তবে কবিতাটি যার-পর-নাই মুগ্ধ করল
শাহনূর 2 সপ্তাহ 6 দিন আগে
তোমার সব ৩৭ নাম্বার আমার ভালোলাগে। এটাও ভালো লাগলো!
শাহনূর 2 সপ্তাহ 6 দিন আগে
"আকাশে দূরে দূরে একটি শহর,
নগরের বেদনা যেমন গুঞ্জে
মেঘের ট্রেন একই দিকে ঝলসে বারবার
স্বপ্নের সমুদ্রে ডুবে পড়ছি আমি,
রাত্রির ট্রেনে, সবাই একলা থাকে
আমি ও সে সেই শহরে নির্ঘুম জেগে থাকি..."
খুব সুন্দর এই স্তবকটা। শূন্যে হারিয়ে যাবার মতো স্তবক। এই কবিতার সব স্তবকই এক একটা কবিতা।
শাহনূর 2 সপ্তাহ 6 দিন আগে
"আসার পথের লাইটপোস্টের
সবগুলো বাল্ব ভেঙ্গে, অন্ধকারে,
এই মুহূর্তে আমি, ওর নিষিদ্ধ প্রীতম, বসে আছি,
রেল-লাইনের স্লিপারে,
দু’পা ইংরেজি উলটো ওয়াই…"
ভ্যান গঁ'র চিত্রকে হারিয়ে দেয় যেন এই স্তবকটা।
খায়রুল আহসান 2 সপ্তাহ 3 দিন আগে
"রাত্রির ট্রেনে, সবাই একলা থাকে
আমি ও সে সেই শহরে নির্ঘুম জেগে থাকি..." - চমৎকার!
ভালবাসা ভালবাসি....
নতুন মন্তব্য পাঠান