অটবী-৪

বিটপীর পিছনে লুকিয়ে থাকা ছায়ারা তমিস্রাতে হারিয়ে যায় শুঁড়িপথে। যে পথ আলেয়ার, যে পথ বৃহন্নলার পদচিহ্নে আবিল, তার মাঝে পড়ে থাকে একটি পাখির মৃতদেহ। থমকে যায় ঋতিমান জিপ। আমার প্রগাঢ় স্টিয়ারিঙে নেমে আসছে প্রহরের জাড্য। আমার প্রগলভ পেট্রল বৃংহণে মিশে গেলো এমন, তাতে কি পশু ছেড়ে দেয় মহুয়ার ক্রীড়নক হয়ে ওঠা ? আমার জুতোর গায়ে লেগে আছে মোহনার বালি। প্রভৃতি নদীর কাছে ফেলে আসি নাগরিক টুপি যাতে ঐতিহাসিকের খননকার্যে উঠে আসি আমি। আমার ক্লীবতা ছাড়া আর কিছুই ফেলে আসার নেই এই বাঙ্ময় বনভূমিতে। জিঘাংসা ছাড়া আর কোনো কিছুই হারাবার নেই এই মিহিজাম ধ্যানে। যেখানে আদিম মানুষগুলি দাঁড়িয়ে থাকে লৌহপ্রাচীরের কাছে নিদারুণ পার্থেনিয়ামে ছেয়ে গেছে আন্দালুসিয়া। এই ধনেশ ডালে বৃষ্টি আসে বৃতির স্বপ্নমাঝে। এই রুখা গাছটি দাঁড়িয়ে আছে কোনো পরিব্রাজকের অপেক্ষায়। তার পদশব্দে মুগ্ধ হয়ে খসে পড়া যায়। এই বনাঞ্চলে নেই কোনো এপিটাফ। মেহগিনির মৃতদেহের গায়ে কেউ লিখে যায় না মৃত্যুর তারিখের কথা। নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে ফুরিয়ে আসে শতাব্দী অনেক। বাংলোতে ফেলে যাওয়া লিপস্টিক ললনার , ঝাড়ুদারের ঊর্মিতে বইতে বইতে মিশে যায় দেবদারু মর্মরে। সে কখনো ভাবেনি এইভাবে বাণপ্রস্থে যাবে। সে কখনো ভাবেনি বেলোয়ারী আয়নার প্রচ্ছায়া পেরিয়ে শেয়ালের ঘ্রাণের মিতবাক রাতে ফুরিয়ে যাবে জং ধরা গেটের গ্রামাফোনে।
- sutanuti-এর অন্যান্য কবিতাপাতা
- এই পাতাটির ক্লিকসংখ্যা 299
